বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৩ অপরাহ্ন
এম.জাফরান হারুন, নিজস্ব প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: কেউ আসেওনা দেখেও না আমরা কতো কষ্টে আছি। বিস্কুটের জন্য বাচ্চারা কাদছে কোনো টাকা পয়সা নেই যে দুইটা টাকা দিয়ে বিস্কুট এনে দিব। করোনা লকডাউন এমন অবস্থা করেছে যে আমরা কোথাও যেতে পারিনা।
কামাই করতে কারও বাড়ি গেলেই দুর দুর করে তাড়িয়ে দেয়। আমরা ছয়টি পরিবার বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে রাতদিন যাপন করছি- এমন ভারাক্রান্ত মনে খা খা রৌদ্র প্রচন্ড গরমে চোখ দুটো জলে টলমল হয়ে এই কথাই রোববার (২৫ এপ্রিল-২০২১ইং) দুপুর সাড়ে বারটার সময় সরেজমিনে সাংবাদিক শেখ এম জাফরান হারুন কে বলেন বেদেনী পরিবারের মেয়ে মৌসুমী আক্তার (২০)।
আজ ৩ মাস ধরে অবস্থান করছেন পটুয়াখালীর বাউফল ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন সংলগ্ন মেইন সড়কের উত্তর পাশে যুবক এনজিও জমিতে। ছোট ছোট ঘর বানিয়ে তাম্বুরা দিয়ে পরিবার নিয়ে থাকছেন তারা। প্রতিদিন কালাইয়া থেকে বাউফল ও বাউফল থেকে কালাইয়া আসা যাওয়ার পথে চোখ পড়ে ওই বেদে সম্প্রদায়ের দিকে।
কিন্তু রোববার হঠাৎ ওদের দিকে তাকিয়ে মটরসাইকেল থামিয়ে চিন্তা করলাম দেখি কি অবস্থায় আছে ওরা। গিয়ে দেখি ওই ছোট ছোট ঘরে বাচ্চাদের নিয়ে গুটিসুটি মেরে বসে আছে।
বাচ্চারা কাদছে। আমাকে দেখেই তেপুরজান বিবি (৫০) নামের এক মহিলা কাছে এসে বললো কি দেখতে এসেছো বাবা, আমরা কি করছি কি খাচ্ছি তাই। আজ ৩মাস হয় এখানে এসেছি ২০টি পরিবার।
লকডাউনের আগেই ১৪টি পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। আমরা যাইনি কিছু আয়রোজগার করে যাবো তাই। কিন্তু করোনা লকডাউনে পড়ে কোনও কাম কামাই নাই।
এখন না খেয়েই থাকতে হয় প্রায় দিন। কত মানুষ আসে দেখে যায়, কেউ বলেনা এই খাবার নিন বা এই দুইটা টাকা নিন অথবা কি খাইছেন কি করেন কেউ জিগায় না।
এদিকে বেদেনী রহিমা বেগম (৩৫) বলেন, এটাই আমাদের পেশা। আমরা মহিলারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিংগা টানি।
আর পুরুষেরা বাজারে বাজারে গিয়ে তাবিজ তুমার ও সাপ খেলা দেখিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করি। লকডাউনের আগে প্রতিদিন ২০০/৩০০ টাকার মতো ইনকাম হতো। মোটামুটি খাওন-পড়ন যাইতো এখন কাজ কাম না থাকায় দিশেহারা রাতদিন যাপন করছি।
বেদে অরুন সর্পরাজ (৪০) জানান, কাম কাজ নাই। হাতে টাকা-পয়সা থাকলে চলে যেতাম। এসে এখন বিপদে পড়েছি। ব্যবসা বানিজ্য এখন আর ভালো নাই। বাড়ি আমাদের গোয়ালনিমান্দা, লৌহজং, মুন্সীগঞ্জ।#####